সুনামগঞ্জে কৃষিযন্ত্র বিতরণে অনিয়ম অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে দুদক
- আপলোড সময় : ১০-০১-২০২৫ ০৮:১৬:৩৯ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ১০-০১-২০২৫ ০৮:১৬:৩৯ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার ::
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ‘কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্প’-এর আওতায় হারভেস্টার মেশিনসহ অন্যান্য ৪০ হাজার কৃষিযন্ত্র বিতরণে অনিয়মের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সুনামগঞ্জসহ সারাদেশে অভিযান পরিচালনা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার (৮ জানুয়ারি) দুদকের এনফোর্সমেন্ট ইউনিট থেকে একযোগে ৬টি অভিযান পরিচালনা করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন কৃষকদের মাঝে বিতরণে অনিয়মের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুদক, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, সিলেট থেকে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে উপপরিচালকের দপ্তর থেকে সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়। প্রাথমিক যাচাইয়ে দেখা যায়, একই ব্যক্তি একাধিক কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন পেয়েছেন, আবার একই মোবাইল নাম্বার দিয়ে একাধিক ব্যক্তি হারভেস্টার মেশিন নিয়েছেন। এছাড়া এক ব্যক্তির নামে বরাদ্দকৃত হারভেস্টার মেশিন উপজেলা কৃষি অফিসারের যোগসাজশে অন্য ব্যক্তিকে প্রদান করা হয়েছে- এরূপ তথ্য পায় দুদক টিম। সার্বিক বিশ্লেষণে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা রয়েছে মর্মে অভিযানকালে টিমের নিকট পরিলক্ষিত হয়। রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা সাপেক্ষে এনফোর্সমেন্ট টিম কমিশন বরাবর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করবে বলে দুদক জানিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র আরো জানায়, সম্মিলিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের আওতায় সুনামগঞ্জ জেলার কৃষি উন্নয়নে মোট ৮৬৯টি হারভেস্টার মেশিন বিতরণ করা হয়। এর মধ্যে ৭১৪টি মেশিন সচল থাকলেও ১৫৫টি বিকল অবস্থায় রয়েছে। প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী, দুই বছরের জন্য ফ্রি সার্ভিস সুবিধা দেওয়ার কথা থাকলেও কৃষকরা অভিযোগ করছেন, মেশিন মেরামতের জন্য টাকা নেওয়া হয়েছে। এমনকি টাকা দিয়েও অনেক সময় মেশিন মেরামত সম্ভব হয়নি, ফলে ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। হারভেস্টার মেশিন বিকল হয়ে পড়ায় কৃষকরা চরম বিপাকে পড়েছেন। অনেক ক্ষেত্রে ফ্রি সার্ভিস সুবিধা না পাওয়ায় তারা নিজেরা অর্থ খরচ করে মেশিন মেরামতের চেষ্টা করতে বাধ্য হচ্ছেন। এর ফলে কৃষি কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
এছাড়াও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার কৃষক মো. রফিক মিয়া ২০২০-২১ অর্থবছরে একটি হারভেস্টার মেশিন পাওয়ার জন্য মনোনীত হয়েছিলেন। কিন্তু বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সাবেক কৃষি অফিসার মো. নয়ন মিয়ার যোগসাজশে ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ফারুক মিয়া তার মেশিনটি নিয়ে গেছেন।
অভিযানের ব্যাপারে দুদকের সিলেট অঞ্চলের সহকারী পরিচালক জুয়েল মজুমদার জানান, আমরা অভিযোগের ভিত্তিতে সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে অভিযান চালিয়েছি। নথিপত্র পর্যালোচনা করে দেখেছি একাধিক ব্যক্তি একাধিক হারভেস্টার মেশিন পেয়েছেন, যা নিয়ম বহির্ভূত। পাশাপাশি, বরাদ্দকৃত মেশিন প্রকৃত উপকারভোগীদের বদলে অন্যদের কাছে দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে অনিয়মের সত্যতা পেয়েছি। তবে পুরো বিষয়টি আরও নথি বিশ্লেষণ করে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ